৪০ বছর ধরে খেজুর রস থেকে গুড় তৈরী পেশায় মনিরুজ্জামান
রাজশাহী প্রতিনিধি;- বয়স ৬০,বয়সের তিন ভাগের দুই ভাগ সময় পার করেছেন খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরী করে।
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মনিরুজ্জামান ৪০ বছর ধরে খেজুর রস সংগ্রহ করছেন।
এলাকায় খেজুর গাছী নামে পরিচিত তিনি। নিজের জমি জমা তেমন নেই বললেই চলে। শীত মৌসুমের কয়েক মাস খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ এবং সেই রস থেকে গুড় তৈরী করে যে আয় হয় সেই আয়ের টাকা দিয়েই সারা বছর সংসার চলে গাছী মনিরুজ্জানের। এভাবেই জীবনের ৪০টি বছর সময় পার করেছেন তিনি। তার বাড়ী রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মনি গ্রামে।
সরেজমিনে ঐ গ্রামে দেখা হয় খেজুর গাছী মনিরুজ্জামানের সাথে। জীবনের দীর্ঘসময়ের পেশা নিয়ে আলাপ চারিতায় তিনি জানান, এবছর তার খেজুর গাছ আছে ৩০টি। নিজের ৯ টি, আর বাকি ২১ টি লিজ নেওয়া। মৌসুমে গাছ প্রতি ৩ কেজি গুড় দেওয়ার শর্তে ২১ টি গাছ লিজ নিয়েছেন তিনি। এই ৩০ টি গাছ থেকে প্রতি সপ্তাহে গুড় উৎপাদন করছেন প্রায় হাড়াই থেকে ৩মণ । বাজারে প্রতি মণ ঝোলা গুড় বিক্রয় করছেন ৩৫শত টাকা থেকে ৪ হাজার টাকায়। তাতে সপ্তাহে তার আয় হচ্ছে ৯থেকে ১০ হাজার টাকা।
তিনি আরো জানান, আবহাওয়া অনুকুল থাকলে মৌসুমে গড়ে সাড়ে ৩ মাস থেকে ৪ মাস খেজুর রস সংগ্রহ করা যায়। গতবছর তার এই ৩০ টি গাছ থেকে আয় হয়েছিল ৭৫ হাজার টাকা। এবছর গুড়ের দাম বেশি থাকায় লক্ষাধিক টাকার বেশি আয় করার আশা করছেন ।
শীতের মৌসুমে রস সংগ্রহের কাজ ছাড়াও গাছী মনিরুজ্জামান বছরের অন্য সময়ে তাল গাছ, খেজুর গাছ, নারিকেল গাছ সহ বিভিন্ন গাছ ঝড়ার(পরিস্কার) কাজ করে বাড়তি আয় করেন। গাছ তার বন্ধু,সন্তান আয়ের উৎস।
স্ত্রী,এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে সংসার তার। দুই সন্তানকেই শিক্ষিত করেছেন তিনি। কয়েক বছর আগে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করছেন। সব মিলে নিজেকে একজন সুখি মানুষ হিসাবে দাবি করেন তিনি।
বাঘার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আক্কাশে আলী বলেন, এই শীত মৌসুমে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় উৎপাদন করে অনেকেই সংসারের বাড়তি আয় করে থাকেন। দেশে খেজুর গুড়ের অনেক চাহিদা আছে। আমরা কৃষকদেরকে জমির আইলে ও বাড়ির পাশে পতিত জায়গায় খেজুর গাছ রোপণের পরার্মশ দিচ্ছি। এছাড়া গাছীরা যাতে পরিস্কার পরিছন্ন এবং স্বাস্থ্যসম্মত খেজুর রস সংগ্রহ ও গুড় উৎপাদন করে বাজারজাত করতে পারে সেদিকেও নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে।