কৃষিখবর

রাজশাহী অঞ্চলে বোরো আবাদে বেড়েছে খরচ , উদ্বিগ্ন কৃষক

আবুল কালাম আজাদ (রাজশাহী) :-রাজশাহী অঞ্চলে বোরো আবাদে খরচ বেড়েছে, চিন্তিত কৃষক।ডিজেলের দাম বাড়ার কারণে রাজশাহী অঞ্চলে বোরো আবাদে সেচ ও ট্রাক্টরের খরচ বেড়েছে। এছাড়া শ্রমিকের বর্ধিত মজুরির জন্য কৃষক উদ্বিগ্ন। রাসায়নিক সারের কৃত্রিম সংকটসহ বোরো আবাদের খরচ চতুর্মুখী বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন এই অঞ্চলের প্রান্তিক কৃষক।
ভুক্তভোগী কৃষকরা বলছেন, গত বছর নভেম্বরে দেশে ডিজেলের দাম প্রতি লিটারে ১৫ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে ৮০ টাকা লিটারে ডিজেল বিক্রি হচ্ছে। বাগমারার কৃষক মকসেদ আলী জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ৫ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। জমিতে ধানের চারা রোপণ পর্যন্ত প্রতি বিঘায় তার খরচ পড়েছে ৯ হাজার টাকার মতো। এরপর জমিতে রাসায়নিক সার দেওয়া, আগাছা পরিষ্কার (নিড়ানি), ধান কাটা ও মাড়াই এবং ডিজেলচালিত ইঞ্জিনে সেচ দেওয়া। এসব খরচ নিয়ে চিন্তিত এই প্রান্তিক কৃষক।
তিনি আরো জানান, গত বছরের তুলনায় এবার প্রতি বিঘা বোরো আবাদের শুরুতেই তার খরচ বেড়েছে ২ হাজার টাকা। শ্রমিকের মজুরি গত বছর ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। শুধু ডিজেলের মূল্য লিটারে ১৫ টাকা বৃদ্ধিতে সেচ ও ট্রাক্টরের খরচ অনেক বেড়েছে। নানা কারসাজিতে রাসায়নিক সারও সরকারনির্ধারিত দামে পাওয়া যায় না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
গোদাগাড়ীর বান্দুড়িয়া হাজীপুর গ্রামের কৃষক নরেশ হেমব্রম জানান, এবার তিনি দুই বিঘা জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণ করেছেন। তার এলাকায় আগে প্রতি ঘণ্টায় সেচ দেওয়া হতো ১১০ টাকায়। এবার তা বেড়ে হয়েছে ১২০ টাকা। দেনার (ঋণ) টাকায় আবাদের ধান কাটার পরেই তা বিক্রি করতে হয়। তখন আবার ধানের নায্য দামও পাওয়া যায় না বলে আক্ষেপ করেন তিনি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে রাজশাহী জেলায় ৬৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তানোর উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ জানান, তিনি এবার চার বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন। প্রতি বিঘায় ধানের চারা রোপণ পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে সাড়ে ৮ হাজার টাকা। তার অভিযোগ, এবার তাকে সব ধরনের সার বস্তাপ্রতি (৫০ কেজির বস্তা) ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি গুনতে হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজশাহীর উপপরিচালক জানান, বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে আরো সময় লাগবে। অনেকের জমিতে এখনো আলু রয়েছে। তারা আলু উত্তোলনের পর বোরো ধানের চারা রোপণ করবেন। তিনি স্বীকার করেন, ডিজেলের দাম বাড়ায় কিছুটা খরচ বেড়েছে। তবে সারের দাম বাড়েনি। সরকার কৃষিতে পর্যাপ্ত ভতু‌র্কি দিচ্ছে। কৃষকও নানা উন্নত কৃষি উপকরণ সহজে পাচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *