পিতৃহীন এতিম মেয়েটাকে মেরে ফেলতে বুক কাঁপেনি ওদের
আবুল কালাম আজাদ (রাজশাহী) ;- আয়েশা জান্নাত ( নদী)। ক্লাস সেভেনে পড়ার সময় হঠাৎ করেই পিতৃহীন। মা আন্জুয়ারা বেগম দিশেহারা।
কিভাবে জীবন – জীবিকা নির্বাহ করবেন ; মেয়েকে পড়ালেখা করাবেন!নিজেও প্রাইমারীর গন্ডি পার হননি।অগত্যা বাধ্য হয়ে একটা আয়ার কাজ নেন।বেতন মাএ ১৭০০/ টাকা।পাশাপাশি বাসাবাড়িতে কাজ করে।
একটা টিনের ছাপড়ায় বাস করেন।কখনো তিনবেলা পেটপুরে খাওয়া হয়নি মা- মেয়ের।অতঃপর আয়েশা ক্লাস এইটে বাচ্চাদের টিউশনি করানো শুরু করে। পাশাপাশি চালাতে থাকে নিজের পড়াশোনা।
২০১৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করার পর ২০০০ সালে এইচএসসি। এরপর রাজশাহী মহিলা কলেজে বাংলায় স্নাতকে ভর্তি হবার পরপরই আসে বিয়ের প্রস্তাব।পাত্র নিউ গভর্মেন্ট ডিগ্রি কলেজে বিবিএ অধ্যায়নরত নওগাঁ সান্তাহার নিবাসী রাকিবুল হাসিব সজীব, পিতা- সারোয়ার, মা- সালমা, সজীব থাকতো মামা-মোস্তফা আর মামী – কোহিনূরের সঙ্গে নগরীর তেরখাদিয়া এলাকায়।একই বাড়িতে থাকতো সজীবের দুই বোন আনিসা আর রাইসা।
উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হবার পরপরই নদী আবিস্কার করে ওর শশুর বাড়ি তে ওর অবস্থান কাজের মেয়ে হিসেবে। হাসিবের বৌ হিসেবে নয়।উপরোন্ত চলতে থাকে পড়ালেখা বন্ধ করার জন্য চাপ।
কিন্তু আয়েশার স্বপ্ন সে পড়াশোনা করে শিক্ষিকা হবে। তাইতো সে আবারও শুরু করে টিউশনি। নিজের পড়াশোনার খরচ এভাবেই চালাতো সে।পড়ালেখার জন্য একটা টাকাও সে কখনো শশুর বাড়ি থেকে নেয়নি। তবুও বন্ধ হয়নি অত্যচার।
এমতাবস্থায় নদী পুনরায় ফিরে আসে মায়ের কাছে। অভিযোগ করে স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার আনারের কাছে। সজীব তখন পুনরায় নদীকে বাসায় নিয়ে যায় এই বলে যে,পড়াশোনার বিষয়ে সে আর বাধা দিবেনা।
বিধিবাম ২১ জানুয়ারি ভোর পাঁচটায় মামী, মা,ও বোনদের সহযোগিতায় তাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করে, ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে নদীর মাকে ডেকে পাঠায় সকাল দশটায়। অথচ নদীর মা থাকতো পাশেই বর্নালীতে।
এভাবেই আয়েশার স্বপ্ন শিক্ষিকা আর হয়ে উঠেনি।।একটা পিতৃহীন মেয়েকে মেরে ফেলতে সজীব ও তার মা,মামী, বোনদের বিবেকে একটুও বাধেনি।
এই নরপশু ও তার মামী, মাও দুই বোনের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবী করছি। পাশাপাশি সবাইকে অনুরোধ করছি তার জন্য দোওয়া করার।