ট্রেন চলে কন্ট্রোলারের নির্দেশনায়’ চালায় শুধু চালক

আবুল কালাম আজাদ (রাজশাহী) :-আমারা সাধানরত জানি ট্রেন চালান ড্রাইভার(লোক মাস্টার)।
আরও ট্রেন পরিচালনা করেন পরিচালক(গার্ড)।আসলে বিষয়টি তার নয়।ট্রেন পরিচালনায়  নেপথ্যে যিনি কাজ করেন তাকে আমরা দেখতে পায়না বলা চিনিনা।যিনি একাজটি করে থাকেন তিনি থাকেন আড়ালে।যাকে বলা হয়ে কন্ট্রোলার।
কন্ট্রোলারের নির্দেশে চলে ট্রেন।চালক আরও পরিচালক চালায় শুধু ট্রেন।
যাত্রা পথে ট্রেনের কোন স্থানে কতগতী,কোথায় যাত্রা বিরতি,কোথায় ক্রসিং, কোন ট্রেন আগে পরে যাবে সবই নির্ধারন করে দিক নির্দেশনা দেন কন্ট্রোল।
একজন কন্ট্রোলার তার ৮ ঘন্টা কর্ম সময়ে কাজ করেন বিরামহীন ভাবে। সামান্য ভুলে ঘটে যেতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা।তাই তাকে সার্বক্ষনিক ভাবে সজাগ থেকে কাজ করতে হয়ে।
ট্রেন কন্ট্রোলারের কাজ:-
একজন ট্রেন কন্ট্রোলার ডিউটি এসেই যে কাজটি করেন, তা হলে তার সেকশনে চলাচলকারী ট্রেনের সম্ভাব্য পাথ ড্রয়িং করা যাতে বিভিন্ন ক্রসিং ও প্রেফারেন্স ফিক্স আপ করা হয়।
কোন ট্রেন  স্টেশন পার হলে স্টেশন মাষ্টার ট্রেনটির ইন এবং আউট দেন যার ভিত্তিতে কন্ট্রোল চার্টে এ্যাডভান্স পাথ করা হয়।
 কন্ট্রোল চার্ট হল এক ধরনের গ্রাফ পেপার যার ভার্টিক্যালি ঘর গুলো সময় এবং হরাইজেন্টালি ঘরগুলো  বিভিন্ন স্টেশনের দূরত্ব নির্দেশ করে । সেকশনাল স্পীড ও ট্রেনের স্পীড দেখে চার্ট এ্যাডভান্স পাথ করা হয়।
বর্তমানে পশ্চিমাঞ্চলে ৭৩ টি স্টেশন বন্ধ ফলে অনেক সময় নির্ধারিত ক্রসিং করা যায়না। ব্লক সেকশন বড় হয়ে যায় ফলে ক্রসিং এ বিলম্বতা বাড়ছে।
একজন কন্ট্রোলারকে জানতে হয় ট্রেনের লোড,  গতি নিয়ন্ত্রনাদেশ সহ আরো অনেক বিষয়। এছাড়া কোন স্টেশন সংলগ্ন বড় হাট কবে বসে তা জানতে হয় কারন এতে  মেইল ও লোকাল ট্রেনের জন্য লোডিং এ সময় লাগে।
ভাল মুভমেন্ট দেয়ার জন্য লোডিং ও আনলোডিং পার্টিকুলার নেয়া হয় স্টেশন ও গার্ডদের কাছ থেকে। এছাড়া জানতে হয় কোন ট্রেনের অফ ডে কবে, টার্মিনাল টাইম কত ইত্যাদি। কারন কোন ট্রেনকে ক্রসিং এ  বেশী বিলম্ব হলে লিংকের পরবর্তী ট্রেন যেন লেট স্টার্ট না হয়।
আর যে ট্রেনের অফ পরদিন হলে অন্য ট্রেনকে প্রাধান্য দেয়া হয়। কন্ট্রোলারের উদ্দ্যেশ্য থাকে একবার কোন ট্রেনকে বসালে পরবর্তী ক্রসিং এ তা আবার বিলম্ব না হয়।
একজন ট্রেন কন্ট্রোলারের ৮ ঘন্টা ডিউটি অনেক কষ্টের ও মানসিক চাপের। মস্তিষ্ক চাঙ্গা রাখতে ডিউটির সময় অনেককে  মাথায় পানি দিতে, এসি র সামনে গিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। কোন কারনে ভুল মুভমেন্ট দিলে তো প্রেশার বেড়ে যায়,  কখন কি বা হয়!আতংকে থাকেন সবসময়।
 কন্ট্রোল চার্ট পরবর্তী দিন বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা পরীক্ষা করে দেখেন, কোন অসংগতি দেখলে তিনি ব্যবস্থা নেন। আনপাংচুয়াল ট্রেনগুলোর ডিটেনশন জোনাল কন্ট্রোল সহ রেলভবন, ঢাকা ইন্টারসিটি সেলে এ  পাঠাতে হয়।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে প্রতিটা ট্রেন মনিটরিং করা হয়। কোন ট্রেন লেট হলে বিকল্প রেকের ব্যবস্থা করা, পূর্বাঞ্চলের সাথে রেক শেয়ারিং, শাটল ট্রেন পরিচালনা ও যাত্রী ট্রান্সশিপমেন্ট এর মাধ্যমে বিলম্ব কমানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়।
জিএম ও সিওপিএস  প্রতিদিন প্রতিটা ট্রেনের আপডেট নেন এবং সাথে সাথে প্রতিকারের ব্যবস্থা নেন। এমনকি কি General Manager-West Bangladesh Railway  নিজে ওয়াশপিটে গিয়ে কাজের তদারকি করেন।
যাত্রীদের ভ্রমণ স্বাচ্ছন্দময় করার জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *