আশিক ফিজিক্স কোচিং সেন্টারের ভেতরে চলছে কিসের কোচিং
স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীকে বলা হয় শিক্ষা নগরী। এখানে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঘিরে প্রায় দুই দশক আগেই গড়ে উঠে কোচিং ব্যবসা। কয়েক বছর ধরে পাঠদানের নতুন আরেকটি পদ্ধতি চলছে। সেটি হলো বিভিন্ন ভাইয়ার ব্যাচে কোচিং। রাজশাহী শহর ঘুরে প্রায় অর্ধশতাধিক ভাইয়া ও কোচিং সেন্টার ও কয়েকজন শিক্ষকের অনুসন্ধান করে বিভিন্ন তথ্য বেরিয়ে এসেছে। জানা গেছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই কোচিং গুলোর শিক্ষক। শিক্ষকদের ক্লাস প্রতি সম্মানী দেয় ভাইয়া ও কোচিং চালানোর সাথে সংশ্লিষ্টরা। আর শিক্ষার্থীদের অভিযোগ তুলছেন তাদের কিছু শিক্ষকদের উপর। যদি কেউ না পড়ে তবে মার্ক কম দেয়া হতে পারে। কিন্তু এরই আড়ালে আরেক ধরনের কোচিং শুধু মাত্র ছাত্রীদের নিয়েই দেহ ব্যবসা চালু করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয় প্রমানও মিলেছে সেই কোচিং সেন্টারের বিরুদ্ধে। রাজশাহী উদ্ভাস কোচিং এর পাশে অবস্থিত ঐ কোচিং এর নাম ‘আসিক ফিজিক্স’ সেন্টার।
আসিক ফিজিক্স (Ashik Physics) এর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে আশিক পরিচয়ে যিনি কোচিং সেন্টার পরিচালনা করছেন তিনি এক ধরনের নারী লোভী প্রতারক। তার বিরুদ্ধে ১২ টিরও বেশী ছাত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগ আছে। নিজেকে খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) শিক্ষার্থী পরিচয় দিলেও তিনি প্রকৃতপক্ষে খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) থেকে পাশও করেনননি কিংবা সেখানকার ছাত্রও নন। তাকে খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কুয়েটের নব নিযুক্ত রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আনিছুর রহমান ভূঞা।
এদিকে আশিকের বিরুদ্ধে (Sexual Harassment Complaint Committee ) সেক্সুয়াল হ্যারেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ও হিউম্যানটরিয়ান বিভাগের প্রফেসর ড.রাজিয়া খাতুন মুঠোফোনে বলেছেন – আশিককে খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্য শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির দ্বায়ে তার ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে এর আগেও সহ শিক্ষার্থীদের যৌন হেনস্থার অভিযোগ আছে।
সর্বশেষ গত ০৭/০৫/২০২৩ ইং তারিখে রাত আনুমানিক ১২ টার দুকে একটি শিক্ষার্থী মেয়েকে নিয়ে অবস্থানের সময় এলাকাবাসী আশিককে হাতে নাতে ধরে ফেলে এবং সেখান এলাকাবাসীর হাতে গনপিটুনী খান আসিক ফিজিক্স সেন্টারের পরিচালক আশিক । এরপরে আসিক ফিজিক্স কোচিং এ অবস্থা করা ঐ মেয়ে শিক্ষার্থীকে বাড়িওয়ালার সার্বিক সহযোগিতায় মেয়েটির বাবা মায়ের হাতে তুলে দেয়া হয়। এসময় বাড়িওয়ালা ও এলাকাবাসী আসিক ফিজিক্স কোচিং এর পরিচালক আসিককে ২৪ ঘন্টার মধ্যে বাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়। আর এভাবেই রক্ষা হয় আরোও একটি শিক্ষার্থীর জীবন।
তবে এই আশিক একজন বড় ধরনের প্রতারক ও নারীলোভী শিক্ষক এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেউ। তবে এই আশিক ফিজিক্স কোচিং এর আশিক রাজশাহী শহরে অবস্থান করছে বলে নিশ্চিত করেছে কয়েকটি সূত্র।
এদিকে স্থানীয়, জাতীয় দৈনিক পত্রিকার এক সমীক্ষায় জানা গেছে কোচিং সেন্টারে ধর্ষনের হার প্রতি নিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
➡ রাজশাহীর মোহনপুরে কোচিং সেন্টারে ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত কোচিং সেন্টারের শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে মোহনপুর থানা পুলিশ – তারিখ ২৪ জুলাই ২০২০
➡রাজশাহীতে কোচিং সেন্টারে দুই ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে শিক্ষক গ্রেফতার – ২৬ ডিসেম্বর ২০২১
➡কোচিং সেন্টারের পরিচালক স্ত্রী পরিচয় অস্বীকার করলে রাজশাহী নগরীতে ছাত্রী নিবাসে ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহয়া করেন এক ছাত্রী শিক্ষার্থী। – ১৬ এপ্রিল, ২০২২
➡ছাত্রীকে ‘বাটপার’ বলে ভর্ৎসনা, কোচিং সেন্টার পরিচালকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ – ০৬ জানুয়ারি ২০২৩
➡রাজশাহীতে ছাত্রকে ধর্ষণের অভিযোগে মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেপ্তার- ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
তবে রাজশাহীর অন্যন্য কোচিং করাতে আসা আরো কয়েকজন অভিভাবকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, যৌন হয়রানির শিকার হলে নারী কিংবা ছাত্রী শিক্ষার্থীদের অবশ্যই অভিযোগ করার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। নতুবা অভিযোগ দায়ের না করলে অপরাধীরা অনায়াসে পার পেয়ে যাবে এবং পরবর্তীতে আবারো অন্যজনের সাথে একই অপরাধ করবে। সেই সাথে স্থানীয় সরকারের মনিটরিং না থাকায় কোচিং সেন্টার গুলোতে ধর্ষনের সংখ্যা বাড়ছে।